বুনিয়াদি শিক্ষা

 "বাবারা, একটু লেখাপড়া শিখ। যতই জিন্দাবাদ আর মুর্দাবাদ কর, ঠিকমত লেখাপড়া না শিখলে কোন লাভ নেই। আর লেখাপড়া শিখে যে সময়টুকু থাকে বাপ-মাকে সাহায্য কর। প্যান্ট পরা শিখছো বলে বাবার সাথে হাল ধরতে লজ্জা করো না।দুনিয়ার দিকে চেয়ে দেখ। কানাডায় দেখলাম ছাত্ররা ছুটির সময় লিফট চালায়। ছুটির সময় দু'পয়সা উপার্জন করতে চায়। আর আমাদের ছেলেরা বড় আরামে খান, আর তাস নিয়ে ফটাফট খেলতে বসে পড়েন। গ্রামে গ্রামে বাড়ীর পাশে বেগুন গাছ লাগিও, কয়টা মরিচ গাছ লাগিও,কয়টা লাউ গাছ ও কয়টা নারিকেলের চারা লাগিও। বাপ-মারে একটু সাহায্য কর। কয়টা মুরগী পাল, কয়টা হাঁস পাল। জাতীয় সম্পদ বাড়বে। তোমার খরচ তুমি বহন করতে পারবে। বাবার কাছ থেকে যদি 
এতোটুকু জমি নিয়ে ১০ টি লাউ গাছ, ৫০ টা মরিচ গাছ, কয়টা নারিকেলের চারা লাগায়ে দেও, দেখবে ২/৩ শত টাকা আয় হয়ে গেছে। তোমরা ঐ টাকা দিয়ে বই কিনতে পারবে। কাজ কর, কঠোর পরিশ্রম কর, না হলে বাঁচতে পারবে না।
শুধু 'বি,এ- এম,এ' পাস করে লাভ নেই। আমি চাই কৃষি কলেজ,কৃষি স্কুল,ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল,কলেজ ও স্কুল,যাতে সত্যিকারের মানুষ পয়দা হয়। বুনিয়াদি শিক্ষা নিলে কাজ করে খেয়ে বাঁচতে পারবে। কেরানী পয়দা করেই একবার ইংরেজ শেষ করে দিয়ে গেছে দেশটা।
তোমাদের মানুষ হতে হবে ভাইরা আমার। আমি কিন্তু সোজা সোজা কথা কই, রাগ করতে পারবে না। রাগ কর, আর যা কর, আমার কথাগুলো শোন। লেখাপড়া কর আর নিজেরা নকল বন্ধ কর। আর এই ঘুষ, দুর্নীতি, চুরি-ডাকাতির বিরুদ্ধে গ্রামে গ্রামে থানায় থানায় সংঘবদ্ধ হয়ে আন্দোলন গড়ে তোল। প্রশাসনকে ঠিকভাবে চালাতে সময় লাগবে। এর একেবারে পা থেকে মাথা পর্যন্ত গলদ আছে।
মাঝে মাঝে ছোট-খাট অপারেশন করছি, বড় অপারেশন এখনো করি নাই। সময় আসলে করা যাবে। তোমাদের আমি এইটুকু অনুরোধ করছি, তোমরা সংঘবদ্ধ হও। আর মেহেরবানী করে আত্মকলহ করোনা। এক হয়ে কাজ কর। দেশের দুর্দিনে স্বাধীনতার শত্রুরা সংঘবদ্ধ, সাম্প্রদায়িকতাবাদীরা দলবদ্ধ, তোমাদের সংঘবদ্ধ হয়ে দেশকে রক্ষা করতে হবে।"

-- স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।(১৯ আগস্ট ১৯৭৩)

নোট :: বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যের এই প্যারাটি আবার পড়ুন।
"শুধু 'বি,এ- এম,এ' পাস করে লাভ নেই। আমি চাই কৃষি কলেজ,কৃষি স্কুল,ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল,কলেজ ও স্কুল,যাতে সত্যিকারের মানুষ পয়দা হয়। বুনিয়াদি শিক্ষা নিলে কাজ করে খেয়ে বাঁচতে পারবে। কেরানী পয়দা করেই একবার ইংরেজ শেষ করে দিয়ে গেছে দেশটা।"

আসলেই বর্তমানে আমাদের দেশে এখন শিক্ষা ব্যাবস্থা লাখ লাখ কেরানী পয়দা করছে।সরকারী চকুরী ছাড়া তেমন
কোন কিছুই ফোকাস করে না।এর মূল কারণ হিসেবে প্রায় সবাই মনে করে সরকারী চাকুরী সেভ জোন,সমাজে চোখে একটা অন্যরকম সুবিধা পাওয়া যায় এ সরকরী চাকিরীতে। লক্ষ লক্ষ বিবিএ, এমবিএ করে বেকার। অথচ কারিগরী শিক্ষাকে সমাজ অন্য চোখে দেখে।এমনকি কারিগরি শিক্ষাকে এক প্রকারে তুছ্য তাচ্ছিল্য ই করা হয়। এভাবে হলে দেশ একসময় সম্পূর্ণ আমলাতান্ত্রিকতায় রুপান্তর হবে।

Long live Bangladesh 🇧🇩❤️
আব্দুল্লাহ ইশতিয়াক
ishtiaksayem1169@gmail.com

Comments

Popular posts from this blog

মুকুটহীন সম্রাট তাজউদ্দীন

হরিপদ কপালী এক অূতপূর্ব কৃষক বিজ্ঞানী।

বাংলাদেশের বৃহত্তর রানওয়ে নির্মান হচ্ছে